গরুর চামড়ার দাম | চামড়ার দাম ২০২৩

Souvik maity
3 Min Read
গরুর চামড়ার দাম

প্রতিবছর চামড়া রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে বাংলাদেশ। দেশে মোট চামড়ার প্রায় ৮০ শতাংশ সংগৃহীত হয় শুধুমাত্র কুরবানির ঈদের সময়। অথচ গত কয়েক বছর ধরে কুরবানির চামড়া নিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা সংকট। চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পেয়ে সেগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলা, নদী-নালা বা রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রশ্ন হলো, প্রতিবছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কেন? এবার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের জন্য কুরবানির চামড়ার মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়নি; দেওয়া হয়েছে লবণযুক্ত চামড়ার মূল্য।চামড়ার দাম ২০২২।গরুর চামড়ার দাম।

গরুর চামড়ার দাম

সাধারণত লবণযুক্ত চামড়ার ক্রেতা ট্যানারি মালিক ও আড়তদাররা। ফলে মূল্য বেঁধে দেওয়ার মধ্যে অস্বচ্ছতার কারণে আবারও চামড়ার বাজারে মূল্য নিয়ে সংশয় থেকেই গেল। অনেকটা অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন একদিনের ব্যবসায়ীরা। আমরা লক্ষ করেছি, ট্যানারি ও আড়তদারদের কারসাজিতে অতীতে বেঁধে দেওয়া চামড়ার মূল্য কার্যকর হয়নি।

চামড়ার দাম ২০২৩

নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কমে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। কুরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহণসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য এবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশ্ন হলো, সংশ্লিষ্ট সবাই এসব পদক্ষেপের সুফল পাবে কি? কারণ অতীতে আমরা লক্ষ করেছি, নানা পদক্ষেপ নেওয়ার পরও চামড়ার দাম নিয়ে কারসাজি হয়েছে। অতীতের মতো এবার যাতে চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কোনোরকম কারসাজি করতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

চামড়ার দাম

কুরবানির চামড়া ন্যায্যমূল্যে বিক্রি না হলে সাধারণ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন যারা চামড়ার টাকার প্রকৃত হকদার। তারা হলেন দেশের হতদরিদ্র মানুষ। প্রকৃত মূল্য না পাওয়ার কারণে চামড়ার একটি বড় অংশ নষ্ট করে ফেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সামগ্রিকভাবে চামড়া শিল্প। আমাদের রপ্তানি পণ্যের খাত সীমিত। কাজেই কারও কারসাজির কারণে চামড়া শিল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

গরুর চামড়ার দাম
গরুর চামড়ার দাম

এবার ঈদুল আজহায় চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্টরা। কারণ চামড়ার বাজারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। বেড়েছে লবণের দাম। পাশাপাশি চামড়া প্রক্রিয়াজাতে ব্যবহৃত রাসায়নিকের দাম বেড়েছে। কেমিক্যালের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। বেড়েছে পরিবহণ খরচও। কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের প্রধান উপকরণ লবণ। অতীতে আমরা লবণ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যও দেখেছি।

দেখা যায়, কোনো একটি ক্ষেত্রে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করার সুযোগ থাকলেই একশ্রেণির ব্যবসায়ী তা কাজে লাগাতে দেরি করে না। তবে সরকার, বিশেষত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সদিচ্ছা পোষণ করলে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমানো সম্ভব। আমরা আশা করব, বিগত বছরগুলোর মতো এবার চামড়ার দাম নিয়ে কেউ কারসাজি করার সুযোগ পাবে না। অর্থাৎ চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

Share This Article
Leave a comment